শুক্রবার, ১২ জুন, ২০১৫

টেলিমালের ক্যামেরা কিনেছেন তো ঠকেছেন!

বিভিন্ন টেলিমাল কোম্পানি তাদের নাম ও ব্রান্ডবিহীন ক্যামেরা আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করে আসছে যাতে তারা ব্যাপক লাভবান হচ্ছে আর ক্রেতাগণ সুভঙ্করের ফাঁকিতে পড়ে দিন দুপুরে জোনাকি দেখছেন। বিশেষত তরুণ সমাজ যাদের একটি ভালো ক্যামেরার শখ তারাই এর শিকার হচ্ছেন; এর আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপনে তারা তাদের ইচ্ছা পূরণ হতে যাচ্ছে বলে ধরে নেয় যা লুডু খেলার পাকা গুটি কাটা যাওয়ার মতো একটি বিষয়ে পরিণত হয়।

এরা কিভাবে কৌশল প্রয়োগ করে?
এরা প্রধানত টিভি চ্যানেলে এ্যাড দেয় এবং তাতে উল্লেখ করে 'অমুক টেলিকম কোম্পানির পক্ষ থেকে বাৎসরিক ছাড় হিসেবে একশটি ক্যামেরা ২৫ হাজার টাকার পরিবর্তে মাত্র ৭৫০০ টাকায় দেওয়া হচ্ছে। সৌভাগ্যবান ক্রেতা হয়ে একশোজনের মধ্যে থাকতে এখনই আমাদের অনুষ্ঠান চলাকালীন স্কিনের ইনসেটে দেওয়া এই ফোন নাম্বারে কল করুন।'
তারপর কেউ ৭০০ তম ব্যক্তি হিসেবে ফোন করলেও তারা জানাবে অভিনন্দন! আপনি ১০০ জনের মধ্যে আছেন। তারপর আপনার ঠিকানা চেয়ে নিয়ে রেজিস্টার করবে এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে লোক মারফত আপনাকে স্থানীয় কোনো শহরের বিশেষ স্থানে এসে আপনার পার্সেল গ্রহণ করতে বলা হবে। আপনি গিয়ে প্রাইস পে করে সেটি আনলেই দিনে জোনাকি দেখবেন।


এসব ক্যামেরার মান কেমন?
১. এসব ক্যামেরা আসলে ক্যামেরা নয়, বোকা বানানোর পণ্য। এর ভিডিও কোয়ালিটি একেবারে লো, সে হিসেবে এর দাম ২৫ হাজার বা ছাড়ে পাওয়া ৭৫০০ টাকা দূরে থাক ৩০০০ টাকা হওয়ারও যোগ্য নয়। এসব ক্যামেরা আপনাকে যে মোড়ক তথা কার্টনে করে দেওয়া হবে সেই কার্টনে একটি উন্নত ক্যামেরার ছবি থাকবে এবং অনেক সার্ভিস বন্দনা থাকবে যা বাস্তবের ক্যামরাটির সার্ভিস কন্ডিশনের সঙ্গে মিল নেই।
২. এর দাম যেখানে ৭০০০ হতে ৭৫০০ টাকা ধরা হয় সেখানে ৬৯০০ টাকার ওয়ালটন এ্যান্ডোয়েড ফোনের ক্যামেরার ভিডিওর মান এসব ক্যামেরার চেয়ে অনেক বেশি উন্নত।
৩. এসব ক্যামেরায় জুম হয় না, জুম করলে ভিডিও অস্পষ্ট ও ঝাপসা হয়। এসব ক্যামেরায় আলাদাভাবে জুম লেন্সও সেট করা যায় না।

তাই আজকের ফটোগ্রাফির শখপ্রিয় তরুণ-সমাজ এসব ক্যামেরা কেনা থেকে বিরত থাকুন এবং ফেসবুকে এটি শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের সচেতন করুন।


© মোঃ মেহেদী হাসান,
লেখক, গবেষক ও সোশ্যাল ওয়ার্কার।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন