সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৭

সরকারি চাকরীতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি অযৌক্তিক!

জব অ্যান্ড লাইফ



সরকারি চাকরীতে প্রবেশের বয়সসীমা '৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর’ করার দাবি অযৌক্তিক— এটি বাস্তবায়িত হলে তা হবে বাংলাদেশের জন্য একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত!

সাধারণত, দেখা যায়— সার্টিফিকেট অনুযায়ী ২৪-২৫ বছর বয়সের মধ্যেই আমাদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন হয়ে যায়। সেই হিসেবে আমরা সরকারি চাকরিতে প্রবেশের জন্য ৫-৬ বছরের মতো সময় পেয়ে যাই।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের জন্য একজন মেধাবী, পরিশ্রমী ও সময়সচেতন ছাত্রের জন্য এই ৫-৬ বছরই যথেষ্ট। যে কমিশন বাংলাদেশে এই বিধান প্রতিষ্ঠা করেছে তারা ভেবে-চিন্তে হিসাব-নিকাশ, গবেষণা করেই এটা করেছে। তারা মেধাবীদের কথা চিন্তা করে এবং দেশের উন্নয়নের কথা মাথায় রেখেই এটাকে আদর্শ মাপকাঠি হিসেবে নির্ধারণ করেছে।

দেখা যাচ্ছে যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী এই সময়টাকে কাজে না লাগিয়ে ভণ্ডামি করে ঘুরে বেড়িয়েছে এবং লাইফ থেকে এই সময়টাকে নষ্ট করে ফেলেছে, এখন তাদের বোধোদয় হয়েছে এবং তারা এখন এই সময় বাড়িয়ে নেওয়ার জন্য আন্দোলনে নেমেছে।

তাদের এই অযৌক্তিক আন্দোলন সফল হলে এবং এই দাবি বাস্তবায়িত হলে তা হবে বাংলাদেশের জন্য একটি আত্নঘাতী সিদ্ধান্ত। কারণ এতে রাষ্ট্রের অর্থনীতি ও উন্নয়নে এমনকি সামাজিক ক্ষেত্রেও তা কীরূপ প্রভাব ফেলবে তা নিম্নে তুলে ধরার চেষ্টা করছি—

১. এর মাধ্যমে রাষ্ট্র অগ্রগতির পরিবর্তে পশ্চাপদতার দিয়ে ধাবিত হবে। যে প্রতিযোগীরা ৩০ বছরের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সফল না হয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগ দেয় এর ফলে তারা আরও ৫ বছর ধরে অহেতুক চেষ্টা করে আরো কিছুদিন বেকার থাকবে। বাস্তবে এখন পর্যন্ত তারা সেই সময়টাতে বেসরকারি জব করে বেশ কিছুটা উৎপাদশীল কাজ করে নিজেরাও কিছুটা ইনকাম করে আর তা জাতীয় আয় ও দেশের উন্নতিতেও অবদান রাখে।

২. তারা নিজেরা ভণ্ডামি করে সময় নষ্ট করেছে, এখন তারা সময় বাড়িয়ে নিয়ে প্রতিযোগীর সংখ্যা বাড়াবে; ফলে তরুণ প্রতিযোগীর জন্য তারা চাকুরীর বাজারটা আরও কঠিন করে তুলবে। একে তো তারা নিজের দোষে নিজেরা বুড়া হয়েছে, এখন তারা তরুণদেরকেও বুড়া বানিয়ে ছাড়বে। এতে করে দেশের ইয়ং লাইফটাইমের একটি প্রডাকটিভ প্রিয়ড আনপ্রডাকটিভ হয়ে থাকবে।

৩. চেষ্টা করেও তারা যখন এই ৫-৬ বছরে পারে নি তখন প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করা হলে বাকি ৫ বছর তারা ভিন্ন পদ্ধতি তথা অসদুপায় অবলম্বন করে তরুণদেরকে ন্যায্য প্রাপ্তি হয়ে বঞ্চিত করবে।

৪. এই আন্দোলনকারীরা যোগদান বয়সসীমার শেষের দিকে কোনোভাবে ৩৪-৩৫ বছর বয়সে সরকারি চাকরিতে জয়েন করলে ১৯-২৪ বছর বয়সী মেয়েকে বিয়ে করবে। পরিবারের চাপে অনিচ্ছা সত্ত্বেও এসব মেয়েরা রাজি হয়ে যাবে। বিয়ে হবে। কিন্তু এত বয়সের ব্যবধানে তাদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা হবে, ফলে মেয়েটা যা প্রত্যাশা করেছিল তা পাবে না। ফলে পরিবারে মেয়েদের মানসিক অশান্তি এবং ডিভোর্সের মাত্রা বেড়ে যাবে।

৫. এর ফলে লেখাপড়া শেষে ছাত্রদের জীবনচক্রে একটা অসহনীয় শূন্যস্থান সৃষ্টি হবে; চাকুরী পেতেই যদি জীবনের ১০ বছর যায়, তাহলে লাইফে আর থাকে কী?

৬. এতসব দূর্গতি তরুণদের মাঝে হতাশার সৃষ্টি করবে; ফলে আবেগপ্রবণ তরুণরা হতাশ নিরাশ হয়ে নেশা, অপকর্ম, অপরাধ ইত্যাদিতে জড়িয়ে পড়বে। সেটা হবে সমাজ ও দেশ ধ্বংসের সুত্রপাত।

অনেকে হয়তো বলতে পারেন যে, কারো জীবনে হয়তো দুর্ঘটনাও তো থাকতে পারে, সেজন্যও কি সময়টা একটু বাড়ানো উচিৎ নয়? তার উত্তর আমি এভাবে দিচ্ছি— অনেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজটের দোহাই দিতো। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট নাই, এখন দেখা যাচ্ছে অন্যসব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাই হয় নাই অথচ তারা ভর্তি নিয়ে ক্লাসও শুরু করেছে এবং তারা সাড়ে তিন বছরে স্নাতক শেষ করার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। আর অল্প কিছু মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের দুর্ঘটনার জন্য সেই প্রভাব কেন আপামর তরুণেরা সাফার করবে?

সরকারি চাকরিতে যোগদানের জন্য যে প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন তার জন্য এই পাঁচ বছরই যথেষ্ট, কোনোভাবেই ১০ বছর নয়। সুপরিকল্পিত পড়াশুনায় ৫ বছরে যা সম্ভব, ভণ্ডামি মার্কা হালকা-পাতলা পড়াশুনায় ১০ বছরেও তা সম্ভব নয়।

উপসংহারে বলতে চাই, জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি United Nation Development Program (UNDP) এর তথ্যমতে এদেশের ৪৯% জনসংখ্যা তরুণ; তাহলে এই তরুণদেরকে কাজে লাগানোর জন্য অবশ্যই তাদেরকে একটি সুন্দর ক্ষেত্র দিতে হবে। তাই ভণ্ডদেরকে সুবিধা দিতে গিয়ে এই তরুণদের বিপুল সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রটাকে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করা উচিৎ হবে না।
তাই কোনোভাবেই এই সময় বর্ধিতকরনের মাধ্যমে এই সম্ভাব্য পশ্চাদপদতার পথ তৈরি করা সমীচীন নয়। আমরা চাই দেশের উন্নতি।

আপনি যদি আমার সাথে একমত হয়ে থাকেন তাহলে এই লেখাটি কপি-পেস্ট করে আপনার ওয়ালে পোস্ট করে দিন।



এক গ্রুপ বলছে তারা ২-৩ বছরের সেশনজট খেয়েছেন তাই সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো দরকার— কী হাস্যকর দাবি!
পরিসংখ্যান করলে দেখা যাবে ২-৩ বছরের সেশনজট খেয়েছেন সারাদেশে এরূপ প্রতিযোগীর সংখ্যা ১৫-২০%। তাহলে সেই ১৫-২০% কে সুবিধা দিতে গিয়ে বাকী ৮০-৮৫% এর অসুবিধার সৃষ্টি করার কোনো মানে হয় না।
অধিকন্তু এতে সেই ১৫-২০% এর তেমন কোনো সুবিধা হবে না, সুবিধা হবে তাদের যারা সময়মতো স্নাতক শেষ করে চাকুরির পরীক্ষা দিয়ে দিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা নিয়েছে।
বরং এর ভালো সমাধান হবে যারা সেশনজট খেয়েছেন তারা আন্দোলন করে সরকারের কাছ থেকে সেশনজট বিষয়ক রিমার্কিং রুল সনদ নিন যেন তাতে যেসব চাকুরী প্রার্থীরা যে যত বছরের সেশনজট খেয়েছেন শুধু তাদের ক্ষেত্রে সেই তত বছর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে আমিও আপনাদের পাশে থাকবো কারণ, আমিও দেড় বছরের সেশনজট খেয়েছি।
সেশনজট গ্রুপ হয়তো বলবেন— তাহলে তো আন্দোলনকারীর সংখ্যা কমে যাবে। তাহলে আপনি বলুন, সবার জন্য প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির আন্দোলনে নিজে আন্দোলন করে অন্যকে সুবিধা দিয়ে আপনার কী লাভ হবে?
 

রবিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৭

যে প্রশ্নের উত্তর মেয়েদের অবশ্যই জানা দরকার, জেনে নিন এখনই—

সমাজ ও সংস্কৃতি



"ক্যাম্পাস" নামক আমার প্রিয় একটি ফেসবুক পেজে "সোয়াইবা খন্দকার" নামক এক মেয়ের প্রকাশিত লেখা পড়ে তার লেখার উত্তর দেওয়ার ইচ্ছা জাগলো তাই উত্তর দিলাম।


সে লিখেছে—
টাইমপাস আসলে কি?প্রেমের নামে অভিনয়?
একাধিক মেয়েকে I Love U বলা?আর যে তোমাকে অধিক পরিমাণে ভালোবাসে তাকে যেভাবে ইচ্ছা ইউস করো,ইমোশনালি,ফিজিকালি ইউস করে আবার আরেকজন অধিক ভালোবাসা ধারীর কাছে যাওয়া,
কিসের লোভ তোমার?কি পাবে এই অসম্ভব নোংরা টাইমপাসে?
সময় ঘুরে যাবে,পৃথিবী ও উল্টে যাবে কিন্তু,একদিন সেই মেয়েটি যার সাথে টাইমপাস করেছো তার মত পরিস্থিতি তে তোমার মেয়ে থাকবে কিন্তু,থাকতেই হবে,
এতো কান্না জলের হিসাব মিথ্যা বিচারে হেরে যাবেনা কিন্তু সেদিন,
নিজেকে হিরো ভাবো?হাজার হাজার মেয়ে পাগোল তোমার জন্য?
যেই জিনিসটা সবচেয়ে সস্তা তারই কিন্ত খদ্দের হাজার হাজার হয় জানো নিশ্চই,
এতো কিছুর পর ভালো বউ ঘরে তুলবে?আর ঐ মেয়েগুলো?যাদের বউ করার স্বপ্ন দেখিয়েছিলে?
বিধাতা তোমাকে ঐত সহজে ছেড়ে দিবে?জানো কি জেনাকারী দের সঙ্গী ঠিক তার মতই জেনাকারী হয়,
তোমার শাস্তি তো তুমি পাবেই,শেষ বয়সে হাজার অসুখ,সন্তানদের লান্চনা,গন্জনা, তোমার বড়লোক সুন্দরী বউএর পরকিয়া সহ্য হবে তো?
হিসাব তোলা থাকলো
প্রতিটা ন্যানো সেকেন্ডের মূল্য দিতে হবে তোমাকে 



আমার উত্তর হলো
সেটা ছেলেদেরকে না বলে মেয়েদেরকে বলো। সহজ সরল সাদামাটা সোজা কথা বলা ছেলেদের তো তাদের ভালো লাগে না; ভালো লাগে চিটিংবাজ কৌশলী ছেলেদের। অার ধোকা খাওয়ার পর বলে ছেলেরা সব খারাপ। সে যে লোভে পড়ে খারাপ ছেলের ফাঁদে পা দিয়েছিল তা সে বুঝে না কেন? সত্যের জগৎ সাদাকালো হয়, অতিরঞ্জিত হয় না, এটা মেয়েদের বোঝা দরকার।
সব কথার মূল কথা, যে ছেলে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেয় সেই মেয়ে তার সাথে ব্রেকঅাপ না করে বরং তার অনৈতিক আবদারকে প্রশ্রয় দেয় কেন?

প্রতারক শ্রেণির ছেলেদের লুচ্চামির ফাঁদ পাতানো মিষ্টি কথায় বোকা, লোভী মেয়েরা ভোলে কেন?
ধুমপান বন্ধের সমাধান হলো সিগারেট উৎপাদন বন্ধ করা; সিগারেটের প্যাকেটে 'ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর' লিখে দিয়ে ধুমপান বন্ধ করা সম্ভব নয়।
তেমনি এই সমস্যার সমাধান মেয়েদের হাতে, ছেলেদের হাতে নয়।

-মেহেদী হাসান
ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ,
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।